আসসালামু আলাইকুম।
কল্পনা করুন তো, এক মহামূল্যবান গুপ্তধনের ভান্ডার, যার সন্ধান পাওয়াটা প্রত্যেক মুসলিমের জন্য কেবল গুরুত্বপূর্ণই নয়, বরং এক পরম পাওয়া। আর সেই গুপ্তধন হলো স্বয়ং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার নাম ও গুণাবলী।
১৪৩৭ হিজরির এক রমজানে, শায়খ ডক্টর ইয়াসির ক্বাদি আমাদেরকে ঠিক সেই অমূল্য রত্নভান্ডারের সফরে নিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি বলছিলেন, এটা এমন এক জ্ঞান যা অর্জন করার জন্য, যা নিয়ে চিন্তা করার জন্য, এবং যা মুখস্থ করার জন্য আমাদের প্রত্যেকেরই সময় দেওয়া উচিত।এই জ্ঞান হলো সবচেয়ে পবিত্র, সবচেয়ে সম্মানিত জ্ঞান যা কোনো মানুষ অর্জন করতে পারে।
একটু গভীরভাবে চিন্তা করে দেখুন, আমরা যখন কাউকে ভালোবাসি, তখন তার সম্পর্কে সবকিছু জানতে চাই, তাই না? তার কী ভালো লাগে, তার ব্যক্তিত্ব কেমন, তার গুণগুলো কী কী—এসব আমাদের জানতে ইচ্ছে করে। এখন ভাবুন তো, সেই মহান সত্তা, যিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন, যিনি আমাদের ভালোবাসেন, তাঁর সম্পর্কে জানাটা কতটা জরুরি?
আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তা’আলা) স্বয়ং আমাদেরকে সেই পথ দেখিয়ে দিয়েছেন। তিনি কুরআনে বলছেন, “আর আল্লাহর জন্যই রয়েছে সুন্দরতম নামসমূহ (আল-আসমাউল হুসনা)। সুতরাং, তোমরা তাঁকে সেই নামগুলো ধরেই ডাকো।” কী অসাধারণ একটি আয়াত! এখানে আল্লাহ শুধু তাঁর সুন্দর নামগুলোর কথাই বলছেন না, তিনি আমাদের উৎসাহিত করছেন সেই নামগুলো ব্যবহার করে তাঁর কাছে দু’আ করতে।
ব্যাপারটা এমন যে, যখন আপনার কিছু প্রয়োজন, তখন আপনি ঠিক সেই প্রয়োজন অনুযায়ী তাঁর নাম ধরে ডাকছেন। যখন আপনি দিশেহারা, তখন আপনি ডাকছেন ‘আল-হাদি’ (পথপ্রদর্শনকারী)। যখন আপনি দুর্বল, তখন ডাকছেন ‘আল-ক্বউইয়্যু’ (সর্বশক্তিমান)। যখন আপনার সুরক্ষা প্রয়োজন, তখন ডাকছেন ‘আল-হাফিয’ (সংরক্ষণকারী)। প্রতিটি নামই যেন তাঁর সাথে আমাদের সম্পর্ককে আরও গভীর, আরও ব্যক্তিগত করে তোলার এক-একটি দরজা।
এই রমাদান সিরিজে শায়খ ইয়াসির ক্বাদি ঠিক এই কাজটিই করেছেন। তিনি আমাদের সেই নামগুলোর মধ্য থেকে কিছু নাম বেছে নিয়ে তার গভীরে ডুব দিয়েছেন। তিনি শুধু নামের অর্থ বলেননি, বরং সেই নামগুলো কীভাবে আমাদের জীবনের সাথে জড়িয়ে আছে, কীভাবে সেই নামগুলোর অনুধাবন আমাদের ঈমানকে শক্তিশালী করতে পারে, তা তিনি অত্যন্ত সহজ ও আন্তরিকভাবে তুলে ধরেছেন।
এই আলোচনাটি কোনো সাধারণ আলোচনা ছিল না। এটি ছিল এক আধ্যাত্মিক সফর, যা আমাদের হৃদয়কে আল্লাহর ভালোবাসায় সিক্ত করে। এটি ছিল এক স্মরণীয় সিরিজ, যা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, আল্লাহকে চেনা ও জানার মাধ্যমেই আমরা প্রকৃত প্রশান্তি খুঁজে পেতে পারি।
এই জ্ঞান অর্জন করা কেবল কোনো রমজান মাসের জন্য সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি আমাদের সারাজীবনের পথচলার পাথেয়। কারণ, আমরা যত বেশি আল্লাহকে তাঁর সুন্দর নাম ও গুণাবলীর মাধ্যমে চিনব, তত বেশি তাঁর প্রতি আমাদের ভালোবাসা বাড়বে এবং আমাদের জীবনটাও ততবেশি অর্থবহ হয়ে উঠবে।
ডাউনলোড লিংকঃ